(৩) ভণ্ডামি উন্মোচনের প্রয়োজন: মুখোশ ভাঙো, মানবতা বাঁচাও

1 September 2025 • 20:59 0 মন্তব্য
(৩) ভণ্ডামি উন্মোচনের প্রয়োজন: মুখোশ ভাঙো, মানবতা বাঁচাও

ভণ্ডামি উন্মোচনের প্রয়োজন: মুখোশ ভাঙো, মানবতা বাঁচাও


আমরা সবাই মানুষ। অথচ আমাদের সমাজে মানুষকেই বারবার অমানুষ বানানো হয়—ভণ্ডামির আড়ালে।

কেউ নিজের স্বার্থ রক্ষায় অন্যের ক্ষতি করে, কেউ ক্ষমতার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নেয়, আর কেউবা মুখে নীতি-কথা বললেও জীবনে তার ছিটেফোঁটাও রাখে না।


এই প্রবন্ধে আমরা খুঁজে দেখব—

1. ব্যক্তি ও সমাজের দ্বিচারিতা,

2. ক্ষমতা ও ভণ্ডামির সম্পর্ক,

3. এবং সত্য বলার মূল্য ও ঝুঁকি।


ব্যক্তি ও সমাজের দ্বিচারিতা


মানুষের ব্যক্তিগত জীবন ও সামাজিক জীবনের মধ্যে এক অদ্ভুত ফারাক দেখা যায়।

• ব্যক্তি হিসেবে অনেকে সৎ হওয়ার দাবি করে, কিন্তু সামাজিক বা রাজনৈতিক পরিসরে অন্যায়ের পাশে দাঁড়ায়।

• পরিবারে নৈতিকতার বুলি কপচালেও বাইরের জগতে সুবিধা পেতে গিয়ে নীতি বিকিয়ে দেয়।


কেন এই দ্বিচারিতা?

কারণ মানুষ অনেক সময় নিজেকে ‘ভালো মানুষ’ হিসেবে দেখতে চায়, কিন্তু নিজের স্বার্থকে ছাড়তে চায় না। ফলত, সে নিজের ভেতরে একটা মুখোশ তৈরি করে নেয়—যা আসল চেহারাকে ঢেকে রাখে।


ক্ষমতা ও ভণ্ডামির সম্পর্ক


ক্ষমতা এমন এক শক্তি যা মানুষকে প্রলুব্ধ করে। ক্ষমতার আসনে বসে অনেকে মনে করে—আমি যা বলি তাই সত্য। এই অহংকার ভণ্ডামির সবচেয়ে বড় উৎস।

• রাজনৈতিক নেতারা জনগণের স্বার্থের কথা বললেও নিজেদের সুবিধার জন্য মিথ্যা বলেন।

• সামাজিক প্রভাবশালীরা নীতি শেখালেও নিজেদের জন্য আলাদা নিয়ম বানান।

• ধর্মীয় বা আদর্শিক নেতা ‘ত্যাগ’-এর বাণী শোনালেও বিলাসিতায় ডুবে থাকেন। ফলত, ক্ষমতার সাথে স্বার্থ এবং ভণ্ডামির এক অদৃশ্য চুক্তি গড়ে ওঠে।


সত্য বলার মূল্য ও ঝুঁকি


ভণ্ডামির মুখোশ ভাঙতে গেলে সবচেয়ে বড় বাধা আসে ভেতর থেকেই—

আমাকে সবাই ঘৃণা করবে না তো?”

আমার কাজ কি ব্যর্থ হবে না?”

আমার ক্ষতি হবে না তো?”

ইতিহাস বলে, যারা সত্য বলেছে, তারা হয়তো প্রথমে একা হয়েছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারাই মানবতার পথ দেখিয়েছে।

• সক্রেটিস মৃত্যুদণ্ড পেয়েছেন সত্য বলার জন্য।

• হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বারবার নির্যাতিত হয়েছেন মিথ্যা ও ভণ্ডামির বিরোধিতা করার জন্য।

• বিশ্বের বহু নেতা ও দার্শনিক স্বাধীনতার ডাক দিয়ে বন্দি ও নানাভাবে নির্যাতিত হয়েছেন।


 

সত্যের মূল্য আছে—কিন্তু তার চেয়ে ভয়ংকর হলো ভণ্ডামি। কারণ ভণ্ডামি মানুষকে ভেতর থেকে পচিয়ে দেয়।


 

চূড়ান্ত কথা: মুখোশ ভাঙো, মানবতা বাঁচাও


 

যতদিন ব্যক্তি এবং সমাজের ভণ্ডামি অটুট থাকবে, মানবতা নিরাপদ নয়। ভণ্ডামি কেবল মিথ্যা নয়, এটি এক ধরনের অসাড়তা—যেখানে মানুষ অন্যায়ের সামনে দাঁড়ায় না, বরং তাকে যুক্তি দিয়ে বৈধ করে।


 

আমাদের দরকার—

• ব্যক্তিগত সততা,

• সামাজিক ন্যায়ের দাবি,

• এবং ক্ষমতার বিরুদ্ধে সত্য বলার সাহস।


 

মুখোশ ভাঙতে হবে, তবেই মানবতার মুখ দেখা যাবে।

ব্লগ
0
জন পছন্দ করেছেন

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই