ভণ্ডামি উন্মোচনের সময়: মুখোশ ভাঙো, মানবতা বাঁচাও
ভণ্ডামি উন্মোচনের সময়: মুখোশ ভাঙো, মানবতা বাঁচাও
মানুষ যখন নিজেকে আড়াল করতে শুরু করে, তখনই জন্ম নেয় ভণ্ডামি। সমাজ যখন অন্যায়ের পাশে দাঁড়ায়, তখনই মানুষ হারায় মানবতা। আর ক্ষমতা যখন সত্যকে চাপা দেয়, তখনই মুখোশ গেঁথে বসে আমাদের মুখে।
ব্যক্তি ও সমাজের দ্বিচারিতা
আমরা ভালো মানুষ হতে চাই—কিন্তু ভালো থাকার দায় নিতে চাই না।
• অফিসে দুর্নীতি দেখি, কিন্তু চুপ থাকি।
• পরিবারে নীতির কথা বলি, কিন্তু নিজের সুবিধায় তা ভাঙি।
• ধর্ম ও আদর্শের বুলি কপচাই, কিন্তু জীবনে তা মানি না।এই দ্বিচারিতা শুধু ব্যক্তি নয়—সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে গেছে। ফলে অন্যায়কে স্বাভাবিক মনে হয়, আর ভণ্ডামিকে বলা হয় “ব্যবহারিক বুদ্ধি।”
ক্ষমতা: ভণ্ডামির আঁতুড়ঘর
ক্ষমতা মানুষকে বদলায় না—ক্ষমতা মানুষের ভেতরের মুখোশ খুলে দেয়।
• ক্ষমতাবান নেতা নীতি শেখায়, কিন্তু নিজের জন্য আলাদা নিয়ম বানায়।
• সামাজিক প্রভাবশালীরা মানবতার কথা বলে, অথচ লোভের কাছে মানবতাকে বিকিয়ে দেয়।
• ধর্মীয় নেতা ত্যাগের বাণী দেন, অথচ ভোগে নিমগ্ন থাকেন। ক্ষমতা আর ভণ্ডামি মিলে তৈরি করে “পবিত্র মিথ্যা”—যা প্রশ্নহীনভাবে মেনে নিতে মানুষকে বাধ্য করা হয়।
সত্য বলার মূল্য
সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো মানে ঝুঁকির মুখে দাঁড়ানো। ইতিহাস তার সাক্ষী—
• সক্রেটিসের মৃত্যু,
• হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর নির্যাতন,
• বহু নেতা ও দার্শনিক কারাবরণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
তারা একা ছিলেন, কিন্তু তারা ভয় পাননি। তারা প্রমাণ করেছেন—সত্য চাপা পড়ে, কিন্তু হারায় না। আজও যে কেউ যদি মুখোশ ছিঁড়ে সত্য বলে, তাকে প্রথমে একা হতে হবে। কিন্তু সেই একাকীত্বই মানবতার আসল শক্তি।
চূড়ান্ত আহ্বান
ভণ্ডামি কোনো ত্রুটি নয়—এটি এক সামাজিক রোগ। এই রোগে আক্রান্ত মানুষ অন্যায়ের পক্ষে যুক্তি দাঁড় করায়। পশুবলি, ধর্মের নামে হত্যা, ক্ষমতার নামে দমন—সবই এই অসাড় বিবেকের ফল।
সময় এসেছে মুখোশ ভাঙার।
• ব্যক্তিকে ফিরতে হবে নিজের বিবেকে।
• সমাজকে ফিরতে হবে মানবতার ন্যায়ে।
• সত্য বলার সাহসকে হতে হবে সর্বশক্তিমান অস্ত্র।
ভণ্ডামি যতদিন বেঁচে থাকবে, মানবতা ততদিন মরতে থাকবে। মুখোশ ছিঁড়তেই হবে—নইলে একদিন সত্য মুখ চেনার শক্তিই হারাবে।
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই