“অসাম্প্রদায়িকতা: সমতা ও মানবতার পথে এক অভিন্ন চেতনা” প্রেক্ষিত বাংলাদেশ।
অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ
- সম্প্রদায় বা Community কি ও কেন? অনেক শব্দের সাথে এই শব্দেরও অর্থবিভ্রাট ঘটানো হয়েছে। পরমকর্তা কি সাম্প্রদায়িক?
- সম্প্রদায় বলতে এক ধরনের সামাজিক গোষ্ঠী বা দলকে বোঝায়, যার সদস্যরা সাধারণত একটি নির্দিষ্ট ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি বা জাতিগত পরিচয়ের সাথে যুক্ত থাকে। তারা একই রকম বিশ্বাস, রীতি-নীতি এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করে থাকে। সম্প্রদায় মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবে এর মাধ্যমে বিভাজনও সৃষ্টি হতে পারে, যদি এক সম্প্রদায় অন্য সম্প্রদায়ের প্রতি অসহিষ্ণু হয়।
- অসাম্প্রদায়িকতা হচ্ছে সেই নীতি বা দৃষ্টিভঙ্গি, যেখানে সব সম্প্রদায়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয় এবং এক সম্প্রদায়ের লোকেরা অন্য সম্প্রদায়ের প্রতি কোনো বৈষম্য বা ঘৃণা প্রদর্শন করে না। অসাম্প্রদায়িকতা আমাদের সমাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষকে একত্রে থাকতে, কাজ -করতে এবং একে অপরের সাথে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে সাহায্য করে।
অসাম্প্রদায়িকতা নিয়ে বক্তৃতা:
বিষয়: “অসাম্প্রদায়িকতা: সমতা ও মানবতার পথে এক অভিন্ন চেতনা”
সুপ্রিয় শ্রোতাগণ,
আসসালামু আলাইকুম, আদাব, নমষ্কার ও শুভেচ্ছা। আজ আমি অসাম্প্রদায়িকতার ওপর কিছু কথা বলতে চাই, যা আমাদের সমাজের শান্তি, সৌহার্দ্য ও মানবিক মূল্যবোধের অন্যতম মূল স্তম্ভ।
অসাম্প্রদায়িকতা এক ধরনের চেতনা, যা ধর্ম, বর্ণ, গোত্র কিংবা সম্প্রদায়ের পার্থক্যকে অতিক্রম করে মানবতার মহাসমুদ্রে সকলকে সমানভাবে স্থান দেয়। এটি সেই দর্শন, যেখানে মানুষকে শুধুমাত্র তার ধর্মীয় বা জাতিগত পরিচয়ের ভিত্তিতে বিচার করা হয় না, বরং তার কর্ম, মানবিকতা এবং ন্যায়ের ওপর ভিত্তি করে মূল্যায়ন করা হয়।
আমাদের দেশ, বাংলাদেশ, অসাম্প্রদায়িকতার এক উজ্জ্বল উদাহরণ। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম মূল লক্ষ্য ছিল একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে সকল ধর্মের মানুষ তাদের নিজস্ব ধর্মবিশ্বাস অনুসারে স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করতে পারবে। ২০২৪ এর জুলাই অভ্যুত্থানে এক নতুন মাত্রা পেয়েছে যা হলো বৈষম্য বিরোধী বিপ্লব ও গন অভ্যুত্থান। …..
কিন্তু, আজও কিছু মানুষ ধর্মীয় বা সম্প্রদায়িক বিভাজন সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। তারা ভুলে যায় যে, ধর্মের মূল শিক্ষা মানবতার কল্যাণে নিবেদিত। কোনো ধর্মই অন্য সম্প্রদায়ের প্রতি ঘৃণা বা সহিংসতার শিক্ষা দেয় না। প্রকৃত ধর্ম মানবতার শিক্ষা দেয়, যেখানে ভালবাসা, সহানুভূতি এবং অন্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শনই মুখ্য।
অসাম্প্রদায়িকতার চর্চা আমাদের জীবনে অত্যন্ত প্রয়োজন। এর মাধ্যমে আমরা একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে পারি এবং বিভাজনের পরিবর্তে ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারি। আজকের বিশ্বে যখন ধর্মীয় সংঘাত ও সম্প্রদায়িক বিভাজন বাড়ছে, তখন অসাম্প্রদায়িক চেতনা আমাদের সমাজের স্থিতিশীলতা ও উন্নতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অতএব, আমাদের উচিত ছোটবেলা থেকেই অসাম্প্রদায়িকতার মূল্যবোধ শেখা এবং তা প্রয়োগ করা। পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সমাজের প্রত্যেকটি স্তরে এই চেতনাকে ছড়িয়ে দিতে হবে।
আমরা যেন মনে রাখি, ধর্ম আমাদের ব্যক্তিগত বিশ্বাসের একটি অংশ, কিন্তু মানবতা আমাদের সবার সর্বজনীন পরিচয়। আসুন, আমরা সবাই মিলে একটি অসাম্প্রদায়িক সমাজ গড়ে তুলি, যেখানে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ শান্তি ও সমান অধিকার নিয়ে বসবাস করতে পারে।
ধন্যবাদ।
- এই বক্তৃতায় অসাম্প্রদায়িকতার গুরুত্ব এবং এর সামাজিক প্রভাবের উপর আলোকপাত করা হয়েছে, যা একটি সমৃদ্ধ সমাজ গঠনে সহায়ক।
- আমরা কি আসলেও স্বাধীন? প্রকৃত স্বাধীনতা কি? আমরা কি আদৌ স্বাধীন হতে চাই? আমরা কি অন্যের বয়ানে মুগ্ধ হয়ে অন্ধ অনুকরন অনুসরনে পরাধীনতার শেকলে বন্দী হয়ে মনে করছি আমরা স্বাধীন। স্বাধীন স্বত্ত্বা বিকিয়ে দিয়েছি। আমরা আজ ধর্মের ধর্মজীবির চিন্তা চেতনা ধারন করে পরাধীন, রাজনীতিজীবির চেতনা ধারন করে পরাধীন, তথাকথিত বুদ্ধিজীবির বয়ানের নিজেদের মননে ধারন করে পরাধীন। এই পরাধীনতা থেকে মুক্তির কথা কি কেউ ভেবেছি? কি করলে মিলবে এই মুক্তির স্বাদ।
- আওয়ামীলীগের চৌর্যবৃত্তির আরেক প্রকৃষ্ট উদাহরন তাদের অসাম্প্রদায়িক মনে করানোর বয়ান।
- শিক্ষাঃ হঠাৎ বাংলাদেশের কি এমন হলো যে মানুষ জীবন দিতে শিখে গেল? কোন বিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কারিকুলামে জীবন বিসর্জনের মত শিক্ষা রয়েছে কেউ কি বলতে পারেন? বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন শুরু হলো এই বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়, ইন্টারনেট বন্ধ করে শুরু হলো ক্রাকডাউন। ঠিক সেই সময় আমি দেখতে পেয়েছি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের মনের অসহায়ত্ব ও আকুতি।
- আমি খুবই আশাবাদি এই জন্য যে আমাদের সমাজের অধিকাংশ মানুষরাই ভাল সৎ ও কর্মঠ যদিও বিভিন্ন পেশাজীবি গৌষ্ঠির দৌরাত্মে নিজেদের হীনমন্য ভাবে। নিজেকে খুঁজে পাওয়ার প্রধান বাধা হলো ঐ সকল পেশাজীবিদের আদর্শ মলে করে তা মন থেকে মেনে নেয়া।
- সাম্প্রদায়ীকতা ও সাম্য দুটি বিপরীতমূখী বিষয়।
- Spirituality without reality is useless.
- সার্বজনীন ও বিশ্বজনীন। এই প্রতিষ্ঠানের নাম কেন university বা বিশ্ববিদ্যালয় আমরা কি ভেবেছি? কেন নামটা মানুষবিদ্যালয় নয়?
- বৈষম্য বিষয়ের ব্যাপ্তি বিশাল। আমরা এই বিশ্বটাকে বৈষম্যময় করে তুলেছি। আমি চাই ছাত্ররা ড.ইউনূসকে সাথে নিয়ে এই আন্দোলনটাকে একটা বৈশ্বিক রূপ দিক।
- আমরা টকশোগুলিতে প্রায়ই দেখি বক্তারা বলেন আপনাদের এটা ওটা বুঝতে হবে… কাদের এই কথা বলি? যারা ফ্যাসিবাদকে ঘার ধরে নামিয়েছে তাদের? আমাদের জনগনের মাইন্ড সেট হয়েই আছে… প্রয়োজন শুধূ নিজেদের পরিবেশ তৈরী করা।
- হাসিনা সরকারের রোষানলের শিকার অনেক সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তি আছেন যাদের ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা সময়ের দাবী।
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই